গল্পটা আবার আমার ধীমান বন্ধুবর বলেই ফেলেছেন। তা হলো- আজকাল বস্তির রাজনৈতিক কদর নেই। বস্তিবাসীদেরকে মিছিলের জন্য আর ভাড়া করে নেয়ার দরকার হয় না। বিনা ভাড়ায় বস্তিতে কাউকে থাকতে দেয়া হয় না। বস্তির ঘরভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল আদায়ের বিশেষ কমিটির লোকজন খুব তৎপর। একটু দেরী হলেই নেমে আসে নির্যাতন। অবৈধ অর্থ ও চাঁদা উত্তোলনের জন্য নেতাদের নিযুক্ত লোকেরা টহল দেয় নিয়মিত। আগে ভোটের রাজনীতি ছিল তাই বস্তিবাসীদেরকে বেশ সমীহ করা হতো। এখন ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে হয় না। তাই কেউ ওদেরকে সম্মান করে কথাও বলে না। ...
পুলিশ থেকে বদলিসূত্রে ৩০.০৫.২০১০ খ্রি. তারিখে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে RAB সদর দপ্তর, ঢাকায় যোগদান করি। ...
অনেক আগে উত্তরের এক গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আমার সাথে ছিল ক’জন সহচর। কার্তিকের এক রোদেলা দুপুরে নিভৃত সেই পল্লীর ঘনবসতির মধ্যে এক বাড়ির বাইরের উঠানে বহু নারী-পুরুষ, শিশু একজন জটাধারী ব্যক্তির চারপাশে জটলা করে ঘিরে রেখেছে। তার পাশে অদ্ভুত পোশাকে ঘুঙুর পায়ে চারজন কিশোরী ঘুর ঘুরে নেচে চলেছে। জটলার ঠিক মাঝখানে একটি খাটিয়ার ওপর একজন নিশ্চল বৃদ্ধার শরীর কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। কৌতুহল বশত: আমরা এগিয়ে গেলাম। জনভীড় ঠেলে সেখানে কি হচ্ছে জানতে চাইতেই গ্রামের একজন মহিলা বলে উঠলেন, বড় অসুখ ঝেড়ে সারানো হচ্ছে সেখানে। ব্যাটা ছেলেদের আর ভেতরে না ঢুকতে তিনি নিষেধ করলেন।...
পড়বি পড় মালির ঘাড়ে। একবারে আসল জায়গায়। ঢাউস জিপগাড়িটির গুঁতোয় কতবার কতকিছু ঘটে গেছে। কত মারপিট করা হয়েছে, কতজন জখম হয়েছে, হাসপাতালে গেছে, কে জানে? তখন ‘ভয়ে কেউ মুখফুটে কিচ্ছু বলে নাইক্কা’। জানালো আশিক টাওয়ারের একজন ব্যবসায়ী। আজও তিনি চারদিকে তাকিয়ে তারপর ভয়ে ভয়ে কথাগুলো বলছিলেন এক টিভি ক্যামেরার সামনে।...
ধীমান বন্ধুবর তার একটি লেখায় বলেছেন, “চুক্তির পর জানা যায় হাসপাতালে লাইসেন্স নাই। রোগীর মৃত্যুর পর জানা যায় ডাক্তার ভুয়া। আগুন লাগার পর জানা যায় ভবনের নকশায় ত্রুটি ছিল। দুর্ঘটনার পর জানা যায় গাড়ি বা লঞ্চের ফিটনেস নেই। শেয়ারবাজার বা ব্যাংক লুট হওয়ার পর জানা যায় কোম্পানি ভুয়া। খাল বিল ভরাট করে প্লট বিক্রির পর জানা যায় অনুমোদন ছিল না । ফ্লাইওভার-ব্রিজ তৈরির পর জানা যায় নকশায় ভুল ছিল । সাজা ভোগের পর জানা যায় আসামি আসল ছিল না। কোটি মানুষ খাওয়ার পর জানা যায় পণ্যে ভেজাল ছিল। লুটেপুটে বিদেশ পালানোর পর জানা যায় কোম্পানি হায় হায় ছিল......চলছে চলুক..”...
আমাদের দেশে প্রতিদিন কত নারী যে ধর্ষনসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তার সঠিক হিসেব না থাকলেও এটা নিশ্চিত যে নারীর প্রতি নির্যাতন প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। যার উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি সিলেট ও নোয়াখালীর ঘটনাসমূহের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।...
কথায় বলে- চোর শ্বশুরবাড়ি গেলেও নাকি চুরি করে। কারণ, চোরের অন্তরে বিষের হাঁড়ি বিরাজমান। সে আপন-পর মানতে জানে না। তবে, চোর কিন্তু হুট করে কোথাও চুরি করতে যায় না। এজন্য তার প্রস্তুতি নিতে যথেষ্ট তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন হয়। গৃহস্থের সব তথ্য গোপনে সরবরাহ করে যে ব্যক্তি চোরকে চুরি করতে সাহায্য করেন তিনি চোরের সোর্স বা ‘থাপইত’ নামে অভিহিত। থাপইত সাহেব গৃহস্থের বাড়ি রেকি করেন, বাড়িতে মানুষের সংখ্যা ও বয়স কত, কে কোন ঘরে থাকে, কখন ঘুমায়, রাতে ক’বার জাগে- উঠে ইত্যাদি জেনে ফেলে। এছাড়া গৃহস্থ তার টাকা-পয়সা, সোনা-দানা কোথায় রাখে, বাড়িতে কুকুর আছে কি-না, থাকলে কয়টা সে তথ্যটাও চোরকে সরবরাহ করে।...
আজকাল সবাই যেমন গ্রেড-ওয়ান প্রফেসর হতে পারেন না তেমনি সবাই সিনিয়র সচিব বা সচিবও হতে পারেন না। কারণ, চাকুরীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া, পদখালি না থাকা, ডিগ্রী ও প্রশিক্ষণ লাভের সীমাবদ্ধতায় যোগ্যতার শর্ত পূরণ না হওয়া সহ অনেকের নানা জটিলতা তৈরী হয়। তার ওপর আমাদের সমাজে অনেক মানুষ এসব পদের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে তৎপর থাকে।...
কিছু মানুষের আয়ের প্রধান উৎস দু’টি। একটি বৈধ উপায়ে অর্জিত আয়, অন্যটি অবৈধ উপায়ে অর্জিত আয়। একটি প্রকাশ্যে করে অন্যটি গোপনে করে। একটির বৈধ হিসাব থাকে, অন্যটির হিসেবের মধ্যে চাতুরী ও গরমিল থাকে। কিছু মানুষ আছে যারা যে কোন উপায়ে অর্থ-সম্পদ পেতে ভালবাসে। শুধু জমা করে নামে-বেনামে। দেশে-বিদেশে। অনেক সময় তারা সেইসব অর্জন নিজেরা ভোগ-দখল করতে পারে না। সেগুলো কে পাবে, কে খাবে, কীভাবে ফিরে পাবে তাও জানে না। অধিকাংশ সময় তারা সেগুলো ফিরে পায় না। উপরন্তু, অবৈধ সম্পদ অর্জন করে একসময় ধরা পড়ে কলঙ্কিত হয়ে লজ্জাজনক ইতিহাস তৈরী করে ফেলে। এটাই তাদের নিয়তি।...
উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাটের বেঙ্গল ডুয়ার্স রেললাইনের পার্শের গ্রামগুলো যেমন তিস্তা-ধরলার পানিতে ভেসে তছনছ গেছে, তেমনি মধ্যাঞ্চলের সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থেকে পূর্বের সুনামগঞ্জ, দক্ষিনাঞ্চলের ভোলা, বরগুনার আমতলী পর্যন্ত পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে বার বার তলিয়ে যাচ্ছে। এ যেন এক বিভীষিকাময় অবস্থা। করোনা, বন্যা, জলোচ্ছাস সবকিছুর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে মানুষ ভীষণ নাজেহাল। ফসল, গবাদিপশু, ব্যবসা হারিয়ে কর্মহীন মানুষের ত্রাহি অবস্থা কিছুতেই দূর হচ্ছে না।...