এমপি বকুলের নেতৃত্বে গ্রেনেড হামলার প্রথম প্রতিবাদ
নাইমুর রহমান।।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার পর নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের নেতৃত্বে ঢাকার বাইরে প্রথম প্রতিবাদ হয়। তিনি সে সময় নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে তাৎক্ষণিক সেদিন হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে শতাধিক গাড়ি ভাংচুর করা হয়। দীর্ঘ ১৯ বছর পর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে ওঠেন।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ২০০৪ সালে তিনি জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি। ২১ আগস্ট নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ছাত্রদল-শিবিরের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে সিংড়া বাজারে ছাত্র গণজমায়েত, সভা ও বিক্ষোভের ডাক দেন। সেদিন ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বর্তমানে নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস। সভা সঞ্চালনা করেছিলেন তৎকালীন সিংড়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বর্তমান সরকারের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বকুল বলেন, ‘সভা চলাকালে আমি যখন সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখছি, তখন কয়েক বার আমার ফোন বেজে ওঠে। তখন সবার হাতে হাতে ফোন ছিল না। বার বার ফোন বাজতে থাকায় ফোন ধরি। ফোনের ওই প্রান্ত থেকে যা শুনলাম, তাতে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীর উপর ঢাকায় গ্রেনেড হামলা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন, শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন কি না, কেউ বলতে পারছে না। এ কথা জানার পর মনে হলো যে দেশে শেখ হাসিনা বেঁচে নাই, সে দেশে আমরা বেঁচে থেকে কি করবে? এই বলে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে আমরা দেড় শতাধিক গাড়ি ভাংচুর করি।’
তিনি বলেন, 'এই ঘটনার পর বিএনপির মন্ত্রী ও নেতারা আমার উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়।পুলিশ আমাকে ধরতে রাতের আধারে বাড়িতে অভিযান চালায়। পরদিন জানতে পারি আমাদের নেত্রী বেঁচে আছেন। তখন যেনো নতুন করে জীবন ফিরে পেলাম। হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে থেকে তখন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছি।'
শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, সকল ষড়যন্ত্র অতিক্রম করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এই অগ্রযাত্রা বিএনপি কখনো মেনে নিতে পারেনি বলেই গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করার ক্ষমতা নেই বিএনপির। তারা বড়জোর ষড়যন্ত্র করতে পারে। এ ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই জনগনের সেবা করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
ঘটনার স্মৃতিচারণ করে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপি বলেন, শহিদুল ইসলাম বকুল একজন ছাত্রনেতা হয়ে ক্ষমতাসীনদের হুমকি-ধামকি তুচ্ছ জ্ঞান করে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর গ্রেনেড হামলার প্রথম প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেন। আজকের আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় অনেক নেতাকর্মী রক্ত-ঘাম বিসর্জন দিয়েছেন। নেত্রী সেই ত্যাগের কথা মনে রেখেছেন এবং সংসদ সদস্য বানিয়ে শহিদুল ইসলাম বকুলকে সম্মানিত করেছেন।
সাম্প্রতিক মন্তব্য