সন্তানদের নিয়ে ঘরছাড়া পরকীয়ার শিকার ঈশ্বরদীর চরগড়গড়ির কাশেম ব্যাপারী
ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
পরকীয়ার শিকার হয়ে চরগড়গড়ি গ্রামের আবুল কাশেম ব্যাপারী ২ পুত্র সন্তান নিয়ে এখন ঘরছাড়া। স্ত্রী কাঞ্চন খাতুনের পরকীয়ায় হারিয়েছেন নিজের বসতবাড়ি, নগদ টাকা, গরু ও অস্থাবর সম্পত্তি। এরইমধ্যে চরকুরুলিয়া আলহাজ্ব মোড়ের কাঁচামালের আড়তদার কাশেম নিজে এবং পুত্রদ্বয় হামলার শিকার হয়েছেন। এছাড়াও প্রতিনিয়ত মেরে ফেলার হুমকীতে সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এঘটনায় কাশেম স্ত্রী কাঞ্চন খাতুন এবং ঘটনার নায়ক লক্ষীকুন্ডা ইউপি’র মেম্বার তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে আবেদন করলেও কোন সুরাহা হয়নি।
ওসাকার পেছনে চরগড়গড়ি গ্রামের মৃত রহমত আলী ব্যাপারীর পুত্র ভূক্তভোগী আবুল কাশেম জানান, লক্ষীকুন্ডা ইউপি’র মেম্বার চরকুরুলিয়ার মেম্বার তরিকুল ইসলাম তার বাড়িতে যাতায়াত করতো। স্ত্রী কাঞ্চন খাতুনের (৩৮) সাথে তরিকুল ধর্ম ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ২৭ বছরের বিবাহিত জীবনে কাশেমের ২৬ বছরের ১টি কণ্যা, ২২ ও ১৫ বছরের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কণ্যার ইতোমধ্যেই বিয়ে হয়েছে। তরিকুল মেম্বারের যাতায়াত অস্বাভাবিক এবং অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি টের পেলে কাশেম তাকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করেন। এরপর তরিকুল বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে দিয়ে ডিভোর্স দিয়ে গত ২২ ফেব্রæয়ারী কাঞ্চনকে বিয়ে করে। বিয়ের পর বাড়িঘর দখলে নিয়ে কাশেম ও তার সন্তানদের বাড়ি হতে বের করে দেয়। কাশেম জানান, বাড়ির জমি যৌথভাবে স্ত্রী ও নিজ নামে কেনা। বাড়ির জমির অর্ধেক স্ত্রীর নামে থাকার কারণে তাদের বাড়ি হতে বের করে দেয়ার সুযোগ নিয়েছে। বাড়িতে ব্যবসার দশ লাখ টাকা ছাড়াও ২টি দামি গরু ও অস্থাবর বহু সম্পত্তি ছিল। নগদ এবং গরু বিক্রির সব টাকা গ্রাস করেছে। তরিকুল মেম্বারের স্ত্রী ও দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে বলে জানান তিনি।
এঘটনায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে আবুল কাশেম স্ত্রী কাঞ্চন খাতুন এবং তরিকুল ইসলামের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, কাঞ্চন ও তরিকুল গত ১০ ফেব্রæয়ারী অকথ্য ও অশালীন গালিগালাজ এবং এক পর্যায়ে মারধর করে বাড়ি হতে বের করে দেয়। আবারও বাড়িতে আসলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকির বিষয়টিও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারী ছোট ছেলে আসিফ (১৬) কে মারধর করে জখমের কথা বলা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওইদিনই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থার জন্য ঈশ্বরদী থানাকে প্রেরণ করলেও আজবধি কোন সুরাহা হয়নি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত তরিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আবুল কাশেমকে বাড়ি হতে বের করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাশেম কাঞ্চনের নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, ৫ ভরি সোনার গহনা ও জমি কটের কাগজপত্র নিয়ে নিজেই মাসাধিককাল যাবত উধাও। তিনি আরও বলেন, কাঞ্চনের সাথে আমার ধর্ম ভাই-বোনের সম্পর্ক থাকলেও আমার বিরুদ্ধে কাশেম ধর্ষণের অভিযোগ করে। একারণে কাঞ্চনের প্রস্তাবে আমি বাধ্য হয়ে তাকে বিয়ে করেছি। কাশেমের নিজের টাকা-পয়সা কিছুই ছিলো না। কাঞ্চনের বাবার বাড়ির টাকায় বাড়ির জমি কেনার সময় কাশেম কৌশলে অর্ধেক নিজ নামে লিখে নেয়। ওই বাড়িও কাঞ্চনের টাকা দিয়ে বানানো। কাশেমকে মারধরের এবং মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে মেম্বার বলেন, মোট ৫ কাঠা জমির অর্ধেক খালি পড়ে আছে, সেখানে কাশেম বাড়ি করতে পাড়ে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য