logo
news image

রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মনোনয়ন পাওয়ায় ঈশ্বরদীতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

 ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবউদ্দিন চপ্পুকে মনোনয়ন পাওয়ায় পাবনার ঈশ্বরদীতে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বিকেলে পাবনা-৪ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ নূরুজ্জামান বিশ্বাসের নের্তৃত্বে শহরে আনন্দ মিছিল বের করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। মিছিলে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও অংগ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশগ্রহন করেন।  মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে শহরের প্রাণকেন্দ্র বাজারের এক নম্বর গেট এলাকায় সর্বসাধারণের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। রাতে শহরের আকবরের মোড় এলাকায় সংসদ সদস্যের বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।




মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এমপি নূরুজ্জামান বিশ্বাস পাবনার কৃত্বি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন চপ্পুকে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সাহাবুদ্দিন চপ্পু সম্পর্কে তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসাবে রাজনীতি করেছেন। ১৯৭০ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বও পালন করেছেন। একজন তৃণমূল পর্যায়ের নেতা থেকে যে রাষ্ট্রপতি হওয়া যায়, সেটি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দেখিয়ে দিয়েছেন। উনি আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ও জীবন্ত ডায়েরি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্টের সর্বোচ্চ সম্মান পেতে যাচ্ছেন। তিনি বরাবরই পাবনার মানুষের জন্য উন্নয়নমূলক চিন্তা ও কাজ করেছেন। তাঁর মতো ব্যক্তিত্ব মনোনয়ন পাওয়ায় আমরা পাবনাবাসী যুবলীগ গর্বিত ও আনন্দিত।




সভাপতিত্ব করেন ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুজ্জামান নাসিম, উপজেলা আ: লীগের যুগ্ন সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, সাংগাঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান দাদু, শ্রমিক লীগ নেতা জাহাঙ্গির হোসেন, সলিমপুর ইউনিয়ন আ: লীগের সাধারন সম্পাদক নায়েক এম এ কাদের, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহব্বায়ক জিএস মাসুদ রানা, যুবলীগ নেতা তৌহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাসসহ দলীয় ও অংগ সংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
 
প্রসঙ্গত: চুপ্পু ১৯৪৯ সালে মো.সাহাবুদ্দিন পাবনা শহরের শিবরামপুর মহল্লার জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতা খায়রুন্নেসা। তিনি পাবনা শহরের পূর্বের গান্ধি বালিকা বিদ্যালয় ও রাধানগর মজুমদার একাডেমিতে প্রাথমিকের পাঠ শেষ করেন। ১৯৬৬ সালে এসএসসি ও ১৯৬৮ সালে এইচএসসি এবং পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৭১ সালে (অনুষ্ঠিত ১৯৭২ সালে) বিএসসি পাস করেন।  পরে ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং পাবনা শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।  

পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হিসেবে তিনি আইন-পেশায় যোগ দেন এবং ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। পরে ১৯৮২ সালে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ থেকে অবসরে যান।  
বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর পরই ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। হত্যা,ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার মতায় এলে ওইসব ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করেন, যার প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মো.সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের অন্যতম কান্ডারী হিসেবে পরিচিত সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনেরও সভাপতি। সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে পরপর দুবার বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে সাহাবুদ্দিন চ্প্পুকে সামরিক আইন বলে গ্রেফতার করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। তিন বছর কারাভোগের পর মুক্ত হলে তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংকের কথিতপদ্মা সেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।  

১৯৭২ সালের ১৬ নভেম্বর পাবনা শহরের দিলালপুরের আলী আকতারের জ্যেষ্ঠ কন্যা ড. রেবেকা সুলতানার সাথে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়ে যুগ্ম-সচিব পদে থাকা অবস্থায় ২০০৯ সালে অবসরে যান। চুপ্পু-রেবেকা দম্পতির একমাত্র সন্তান মো.আরশাদ আদনান (রনি) দেশে ও বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে বর্তমানে দেশের একটি বেসরকারি ব্যাংকের উচ্চপদে কর্মরত আছেন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য