শিল্প ও বাণিজ্য উপ-কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে জমি ও রাস্তা দখলের অভিযোগের প্রতিবাদ
পাবনা প্রতিনিধি:
ঈশ্বরদীতে জমি ও রাস্তা দখলের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত ফাঁসির দড়ি গলায় দিয়ে প্রতিকী আত্মহুতি, মানববন্ধন সংশ্লিষ্ঠ অভিযোগ এবংএবিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপ-কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন তুহিন।
গত শুক্রবার (২৯) জুলাই সকালে জয়নগর ওয়াবদা গেটের সামনে (চরমিরকামারী) ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসীদের আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতীকী আত্মহুতির কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচির সংবাদ দৈনিক ইত্তেফাকসহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক, অনলাইন ও টিভি মিডিয়ায় এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ( ২রা আগষ্ট) বিকেলে জালাল উদ্দিন তুহিনের আয়োজনে জয়নগর ওয়াবদা গেটের সামনে তার বাংলোয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট ও দূরভিসন্ধিমূলক বলে দাবী করা হয়।
জমি বিক্রেতা ওয়ারিশের মধ্যে লাইলা আরজুমানকে দিয়ে তুহিনের বাংলোয় একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করানো হয়। বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, জমি বিক্রয়ের পূর্বে ক্রেতা জালাল উদ্দিন তুহিনের স্ত্রী আজমেরী সুলতানার নিকট সার্ভেয়ার দ্বারা জমি পরিমাপ করে সীমানা পিলার পুতে সম্পত্তি বুঝিয়ে দেই। তিনি আরও বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে আবুল কালাম আজাদ রাশেমসহ অন্যান্য ওয়ারিশগণ আদালতে প্রিয়েমশন মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আইনের তোয়াক্কা না করে তুহিনের রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুন্নের জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশনের ব্যবস্থা করেছে।
পরে জালাল উদ্দিন তুহিন গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও প্রতীকী আত্মহুতির ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, মানহানির উদ্দেশ্যে তারা মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে। ওনারা (শরীক) টাকা নিয়ে আসলে জমি ফেরত দেব বলেছি। তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনের সময় রিক্সার হ্যান্ডেল ধরে এবং ১৯৯৪ সালে শেখ হাসিনার ট্রেনযাত্রায় হামলার ঘটনার সময় আমি মিছিল নিয়ে উপস্থিত ছিলাম বলে দাবি করেন। এসময় তিনি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা চান্না মন্ডল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান মিন্টুর নাম স্বাক্ষী হিসেবে উল্রেখ করেন। এবিষয়ে গোলাম মোস্তফা চান্না মন্ডল এবং মোকলেছুর রহমান মিন্টু’র সাথে যোগাযোগ করা হলে উভয়েই তুহিনের দাবির সত্যতা নেই বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত: চরমরিকারী গ্রামের মৃত আব্দুর রশীদ প্রামানিকের ৭১ শতক জমিতে ওয়ারিশগণের বসতবাড়ি, চাউল কল ও রাস্তা রয়েছে। এই সম্পত্তির ১৩ ওয়ারিশের মধ্যে আব্দুর রশীদের দুই ওয়ারিশ বাটোয়ারা ছাড়াই জালাল উদ্দিন তুহিনের স্ত্রী আজমেরী সুলতানার নিকট আংশিক জমি বিক্রি করেন। এরই প্রেক্ষিতে আদালতে প্রিয়েমশন (অগ্রযাত্রা) মামলা ও শোকজ করা হয়। এরপরও ২৪ জুলাই জালাল উদ্দিন তুহিন ও তার স্ত্রী আজমেরী সুলতানার সন্ত্রাসী বাহিনী মিল ঘরের চলাচলের রাস্তা ও মিল ঘর ঘিরে নেয় এবং মিলঘরের যন্ত্রপাতি লুটপাঠ করে বলে গত ২৯ আগষ্ট ভূক্তভোগী আবুল কালাম আজাদ রাশেমসহ আরও ৫ জন লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। অভিযোগে আরও বলা হয়, আইকে রোড সংযুক্ত মিলের চলাচলের রাস্তা দিয়ে গ্রামবাসী, মুসল্লী ও শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। তুহিন স্ত্রীর নামে যে সম্পত্তি ক্রয় করেছে সেই দলিলে বসতবাড়ি উল্লেখ আছে, মিল-চাতাল বা রাস্তা উল্লেখ নাই। বসতবাড়ির সম্পত্তি দখল না করে রাস্তা এবং চাউল কল ও বেদখল করায় আয়ের উৎস বন্ধ হওয়ায় আমরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলে ভূক্তভোগীরা জানান।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ছাত্রদলের নেতা জালাল উদ্দিন তুহিন এবং বিএনপি’র সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত তার ২য় ভাই রফিকুল ইসলাম মুকুল মাষ্টারের লোকজন আমাদের প্রতিনিয়ত জীবননাশের হুমকিও প্রদান করছে বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে জালাল উদ্দিন তুহিন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ।
সাম্প্রতিক মন্তব্য