logo
news image

শুভ জন্মদিন এমপি বকুল

আনোয়ারা খাতুন শেফালী।।
৫৮ নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকে বিজয়ী শহিদুল ইসলাম বকুলের ৫০তম জন্মদিন শনিবার (১৬ জুলাই ২০২২)।
দৈনিক প্রাপ্তি প্রসঙ্গ পত্রিকা’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।  
মো. শহিদুল ইসলাম বকুল ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই বাগাতিপাড়া উপজেলার স্যানালপাড়া গ্রামের এক বনেদি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আজিজুর রহমান স্বাধীনতা পূর্ব আমল থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭০ সালের পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে তাঁর আসনের এমপি পদপ্রার্থী বাবু শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করেন এবং তাঁকে বিজয়ী করেন। তিনি ওই নির্বাচনে অনেক বড় মাপের সংগঠক ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। শহিদুল ইসলামের মাতা সখিনা বানু। বড় ভাই শরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠিতা নেতা এবং তিনিও চার মেয়াদে (২০ বছর) ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এমপি বকুল পিতা-মাতার সপ্তম সন্তান। স্ত্রী সায়েরা বানু ছায়া। তাঁদের একমাত্র সন্তান ইয়াসার আনজুম সোয়াদ।
তাঁর লেখাপড়া শুরু হয় গ্রামের বিদ্যাপীঠ থেকেই। তিনি পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বাগাতিপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে সাফল্যের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে বাগাতিপাড়া ডিগ্রী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় ভর্তি হন। সেখানেই তাঁর ছাত্র রাজনীতির হাতেখড়ি। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসারে লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি মুজিববাদী আদর্শের ছাত্র রাজনীতিতে খুব জোরে সোরেই সম্পৃক্ত হন। বাড়িতে লেখাপড়া আর কলেজে স্বৈরাচারী এরশাদ অপশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল-মিটিং আর প্রতিবাদ সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নিজেকে তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আব্দুলপুর সরকারি কলেজে স্নাতক শ্রেণীতে ভর্তি হন। জনপ্রিয় ছাত্র নেতা হওয়ার সুবাদে সেখানে লেখাপড়া করা অবস্থায় সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের চাপে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং বিপুল ভোটে এজিএস পদে নির্বাচিত হন।
দিন দিন তাঁর ছাত্র রাজনীতির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকলে এক পর্যায়ে ১৯৯৩ সালে তিনি বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ লাভ করেন এবং ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এ পদে বহাল থাকেন। সাধারণ সম্পাদক পদে দক্ষতার কারণে তিনি ১৯৯৭ সালে বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিও নির্বাচিত হন এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। দিন দিন তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকলে তাঁর ব্যাক্তিত্ব উপজেলার গণ্ডি পেরিয়ে তা জেলার রাজনীতিতে ঢেউ লাগে। শুরু হয় নাটোর জেলার ছাত্র রাজনীতি। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জেলার নেতাদের ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়। ফলে তিনি জেলার বিভিন্ন ছাত্র নেতাদের টপকিয়ে শক্ত গ্রুপের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২০০০ সালে নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ লাভ করেন এবং ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ পদে বহাল থাকেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লিয়াকত-বাবু কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নাটোর জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তিনি জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করেন এবং দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম শেষে ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর সম্মেলনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ লাভ করেন। বর্তমানে তিনি নিষ্ঠার সাথে এ পালন করে চলেছেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি অত্যন্ত সদাচারি এবং সুবক্তা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। রাজনীতিতে ও ব্যক্তি জীবনে তিনি অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের অধিকারী। সামনের দিনগুলিতে সংসদে ব্যাপক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি এলাকার সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও দুর্নীতি দমনে তিনি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে এগিয়ে চলেছেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর তিনি বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মিনী কামরুন্নাহার শিরিনকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top