নিজেই বিয়ে বন্ধ করল কিশোরী
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে প্রশাসনের সহযোগিতায় নিজের বিয়ে বন্ধ করল ১৪ বছরের এক কিশোরী।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর ২০২১) উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই কিশোরী জানায়, সে গার্মেন্টসে চাকরীজীবী বাবা-মায়ের সাথে ঢাকায় থেকে একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। বাবা-মা তাকে নিয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলার মাছিমপুর গ্রামে নানা বাড়িতে ওঠে। এরই মধ্যে সে জানতে পারে বিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের নাগদহ গ্রামে তার দাদার বাড়িতে এনে বিয়ে দেওয়া হবে। পাশ্ববর্তী ওয়ালিয়া ইউনিয়নের দেলুয়া গ্রামে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে।
সে কৌশলে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে নানার বাড়ির পাশেই বেসরকারি সংস্থা ‘নিজেরা করি’ ভূমিহীন সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি অবগত করে। সংস্থার পক্ষ থেকে বাগাতিপাড়া ও লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন। ওই কিশোরী আরো জানায়, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তার বাবা-মা রাগ করে তাকে নানার বাড়িতে রেখে ঢাকাতে চলে যায়।
বেসরকারি সংস্থা ‘নিজেরা করি’র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাগাতিপাড়া মাছিমপুর গ্রামের ওই কিশোরীকে লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের নাগদহ গ্রামে তার দাদার বাড়িতে এনে বিয়ে দেওয়া দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। দেলুয়া গ্রামে পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়। ওই কিশোরী বিষয়টি তাঁকে অবগত করলে লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়।
চংধুপইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু আল বেলাল বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর প্রশাসনের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। আর যেন বিয়ে না দিতে পারে সে বিষয়ে পরিষদ থেকে তদারকি করা হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ‘বাল্যবিয়ে দেবেন না’ বলে মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। এতে মেয়েটির বাবা-মা রাগ করে মেয়েকে নানার বাড়ি রেখে ঢাকায় চলে যান। মুঠোফোনে তাদের সাথে পরামর্শক্রমে নানার বাড়ি থেকে মেয়েটিকে নিয়ে এসে দাদার বাড়িতে পৌঁছে দেন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফজলুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পুলিশ মেয়েটিকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য