বিদ্রোহীদের জয়ে এমপি বনাম আওয়ামী লীগ
ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর)
তৃতীয় ধাপে নাটোরের লালপুরের ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিদ্রোহীরা জয় লাভ করেছে। রোববার (২৮ নভেম্বর ২০২১) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ৫ জন বিদ্রোহী, নৌকা প্রতীকে ৩ জন এবং বিএনপির ২ জন প্রার্থী বেসরকারিভাবে জয়ী হন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাসিব বিন শাহাব জানান, লালপুরে মো. আবু বক্কর সিদ্দিক পলাশ (নৌকা), ঈশ্বরদীতে মো. আব্দুল আজিজ রঞ্জু (ঘোড়া-বিএনপি), চংধুপইলে মো. রেজাউল করিম (নৌকা), আড়বাবে মো. মোকলেসুর রহমান (ঘোড়া-বিদ্রোহী), বিলমাড়ীয়াতে মো. ছিদ্দিক আলী মিষ্টু (ঘোড়া-বিএনপি), দুয়ারিয়াতে মো. নুরুল ইসলাম লাভলু (নৌকা), ওয়ালিয়াতে মো. নূরে আলম সিদ্দিকী আলম (ঘোড়া-বিদ্রোহী), দুড়দুড়িয়াতে মো. তোফাজ্জল হোসেন তোফা (আনারস-বিদ্রোহী), অর্জুনপুর-বরমহাটীতে (এবি) মো. গোলাম মোস্তফা আসলাম (আনারস-বিদ্রোহী) এবং কদিমচিলানে মো. আনছারুল ইসলাম (ঘোড়া-বিদ্রোহী) বিজয়ী হয়েছেন।
লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইসাহাক আলী বলেন, নির্বাচনে বিএনপির কোন দলীয় প্রার্থী ছিল না। তারা আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে বিদ্রোহীদের ভোট দিয়ে জয়ী করেছে। অপর দিকে নৌকার পরাজিত প্রার্থীরা অধিকাংশ বর্তমান চেয়ারম্যান ছিলেন। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে তাদের ব্যর্থতা পরাজয়ের কারণ হয়েছে। তাছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্যের পৃষ্ঠপোষকতা ও অনিয়মের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা দলীয় প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগের কমিটির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বিএনপির সাথে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে আতাত করেছেন। বিএনপির ভোট নিয়ে বিদ্রোহীদের জয়ী করেছেন। আর বিএনপি পন্থী দুই জনকে সমর্থন দিয়ে জয়ী করেছেন। আর নৌকার প্রার্থীদের পরাজিত করেছেন।
নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়নের বিদ্রোহী হয়ে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি কাউকে বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড় করাননি। দলের যারা মনোনয়ন চেয়েছিল তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। তারা এলাকায় এসে ভোট করেছেন যার দায়িত্ব তাঁর নয়।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির সাথে তাঁদের কোন আতাত হয় না। আতাতের রাজনীতি তারা করেন না। নির্বাচিত হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে যাঁরা জনপ্রিয় তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া। সেটার তারাই বলতে পারবে কী কারণে হেরেছে। বিএনপি বা এমপিকে দায়ি করে কোন লাভ নেই। আত্মসমালচনা তাদেরকে করতে বলেন, কেন নৌকার প্রার্থীরা হেরেছেন। তাঁর কোন প্রার্থী মনোনয়ন পাননি। তাই যতটুকু সম্ভব নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন।
সাম্প্রতিক মন্তব্য