পুলিশি হামলায় অাহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে শিক্ষকরা
জাবি প্রতিনিধিঃ সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধকালে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে যান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নূরুল হক ও সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ। এসময় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদা আখতার ও অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার জন্য বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারাজানা ইসলাম। এসময় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, কোটা সংস্কার একটি যৌক্তিক দাবি। পুলিশি হামলা চালিয়ে এ আন্দোলন দমানো যাবেনা। এ দাবি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। কিন্তু সরকার তা না করে শিক্ষার্থীদের উপর একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। আমরা আর রক্তপাত চাই না। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী এবং জাহাঙ্গীর কবির নানককে বিষয়টি জানিয়েছি। কেন আমার শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ হামলা করে রক্তাক্ত করলো আমি তার জবাব চেয়েছি। শিক্ষার্থীদের চলমান যৌ্ক্তিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ৫৬% কোটা আসলেই একটি জাতির জন্য লজ্জাজনক। এ আন্দোলনে আমাদের সমর্থন আছে, আমরা তোমাদের পাশে আছি। প্রয়োজন হলে তোমাদের সাথে আমরা একসাথে আন্দোলন করবো। এসময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমির হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদা আখতার সহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্বদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ প্রদক্ষিণ করে সকাল সাড়ে ১০টার দিয়ে জয়বাংলা গেইট দিয়ে বের হয়ে প্রধান ফটকের সামনেই অবস্থান নেয়। এতে সড়কের দুপাশে বাঁধে তীব্র যানজট। দফায় দফায় আলোচনার পর পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে জলকামান ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইনসহ আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। দুপুরে দিকে আন্দোলনে এসে সমর্থন জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে জনভোগান্তি না করতে সতর্ক করেন আন্দোলনকারীদের। বিকেল তিনটার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেন। এরপর থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলন আজকের মতো স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক খান মুনতাসির আরমান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশে পরবর্তী কর্মসূচি আবার জানানো হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য