logo
news image

পৌরসভা শাখায় আওয়ামী লীগের একমাত্র নারী সভাপতি গোপালপুর পৌর মেয়র লিলি

ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি।।
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার প্রথম নারী মেয়র আওয়ামী লীগের রোকসানা মোর্ত্তজা লিলি। তিনি পৌরসভা শাখায় আওয়ামী লীগের একমাত্র নারী সভাপতি। পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠার ২১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিজয় ছিনিয়ে আনেন তিনি।
মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে গোপালপুর পৌরসভাকে নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন, ‘২০১৫ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে হেরে গেলেও থেমে যাইনি। গত পাঁচ বছরে পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরেছি। দেখেছি, এলাকার রাস্তা বেহাল। এসব নিয়ে কথা বলায় মানুষ পৌরসভার উন্নয়নে আমার আন্তরিকতার কথা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমে এদিকে নজর দিতে চাই। এরপর সড়কবাতি। কারণ, পৌর এলাকার কোনো সড়কেই বাতি নেই।’
নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধির স্বাধীনতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। সাত বছর ধরে গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এর আগে নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলাম। আমার নিজস্ব রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে। সুতরাং শুধু নারী হিসেবে নয়, গণমানুষের প্রতিনিধি হিসেবে আমি কাজ করব। এ ছাড়া আমার পারিবারিক সংস্কৃতিও অযাচিতভাবে প্রভাবিত করার মতো নয়। সুতরাং কারও প্রভাবে নয়, কাজ করব নিজের চিন্তা, দক্ষতা, যোগ্যতায়।’
মেয়র হিসেবে পৌর এলাকার উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের ব্যাপারে বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হিসেবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমি গোপালপুর পৌরসভাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় থাকার কারণে পৌরসভার বিশেষ উন্নয়ন বরাদ্দের ব্যবস্থাও করতে পারব।’
জনপ্রতিনিধির দুর্নীতি ও লুটপাটের নিয়ে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার বাড়ি-গাড়ি সব আছে। তিন সন্তানের সবাই প্রতিষ্ঠিত। বড় মেয়ে সিলভিয়া পারভীন আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। একটি বেসরকারি রেডিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও পরিচালক। ছেলে মোতাহারই মোসলেন মালয়েশিয়া থেকে পড়াশোনা শেষ করে ওমানে চাকরি করছে। ছোট মেয়ে নিশাত আঞ্জুম দেশের একটি বড় গ্রুপের আইনবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। সুতরাং তাদের খাওয়াপরার জন্য আমাকে চিন্তা করতে হয় না। এলাকার মানুষও জানেন, আমার কোনো লোভ নেই। বিভিন্ন দুর্যোগে-দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সুতরাং শতভাগ আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি, দুর্নীতির মনোভব আমাকে স্পর্শ করতে পারবে না।’
নির্বাচনে দলীয় অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনের সময় সবার সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি, আমার ওপর কেউ মন খারাপ করে থাকবেন না। নেতা-কর্মীদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। বিশ্বাস করি, সবাই সেই সহযোগিতা করবেন।’
পরিচিতি:
নাটোরের লালপুর উপজেলার শিবপুর (খাঁপাড়া) গ্রামে ১৯৬৪ সালের ৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন রোকসানা মোর্ত্তজা লিলি। পিতা মরহুম রমজান আলী মিয়া ও মাতা আছিয়া বেগম। স্বামী গোলাম মোর্ত্তজা বাবু। তাঁদের সন্তান বড় মেয়ে সিলভিয়া পারভীন আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। একটি বেসরকারি রেডিওর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও পরিচালক। ছেলে মোতাহারই মোসলেন মালয়েশিয়া থেকে পড়াশোনা শেষ করে ওমানে চাকরি করছে। ছোট মেয়ে নিশাত আঞ্জুম দেশের একটি বড় গ্রুপের আইনবিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তিনি গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
তিনি নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি গোপালপুর পৌরসভার পঞ্চম নির্বাচনে ইতিহাস গড়েন রোকসানা মোর্ত্তজা লিলি। এক দিকে পৌরসভার ইতিহাসে প্রথম নারী মেয়র হিসেবে স্থান করে নেন। অপর দিকে পৌরসভার বিগত ২১ বছরের ইতিহাসে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর নিকট থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিজয় ছিনিয়ে আনেন। ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top