মো. জিল্লুর রহমানের ১১ তম মৃত্যুবার্ষিকী
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
২১ অক্টোবর ২০২০ সাবেক এমপিএ ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. জিল্লুর রহমানের ১১ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালের ২১ অক্টোবর তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
নাটোরের লালপুরের প্রথম সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান ওরফে জুল্লুর ১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি গোপালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গোলজার হোসেন শেখ ও মাতা মরহুম লেকজান বেগম। স্ত্রী মাহেতালাত আরা বেগম, সাবেক অধক্ষ, গোপালপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজ। তাঁদের এক ছেলে মো. রাউফুর রহীম হৃদয়, ব্যবস্থাপক (ভূপদার্থ), বাপেক্স, পেট্রোবাংলা এবং তিন মেয়ে রিনী রাইয়ান, জান্নাতুল ফেরদৌস, তানজিনা নাহরীন (সকলে গৃহিনী)। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই বড়। ভাই গোলাম মোস্তফা (মৃত), মো. মজিবর রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন কচি এবং বোন জোবেদা খাতুন।
তিনি এমএ (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) ও এমএ (ইংরেজী) বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সংযুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৬৭ সালে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ছিলেন। তিনি লালপুর থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. খলিলুর রহমান বিশ্বাস ওরফে খলিল বিশ্বাসের সময় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো. জিল্লুর রহমান। তিনি ১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে রাজশাহী-১৪ (লালপুর-চারঘাট) আসন হতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর আহবানে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য ভারতের মুর্শিদাবাদের শেখপাড়া প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ৭ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর গিয়াস উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার নাম বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তালিকায় স্বাধীনতার বীর সেনানী স্মরনীয় যারা বরনীয় যারা এর তালিকাতে (নং-০৭০০০০০২৩৯) লিপিবদ্ধ রয়েছে। এই তালিকার ১নং ক্রমিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ কালীন পদবী/দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচিত এলাকার এমপিএ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তিনি ভারতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। লালমুক্তি বার্তা (০৩০৪০৪০১৭৮) ছাড়াও অন্যান্য তালিকাতেও তার নাম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
১৯৭২ সালের পর তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। তিনি ১২/১২/১৯৭৪-১০/১২/১৯৭৫ পর্যন্ত গোপালপুর কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর লালপুর ডিগ্রী কলেজে ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে যোগদান করে দীর্ঘ দিন কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত গোপালপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। স্বাধীনতার পরে এলাকার শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি গোপালপুর ডিগ্রী কলেজ, গোপালপুর আর্দশ মহিলা ডিগ্রী কলেজ, গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলকাকলী কেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। গোপালপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান। ২০০৯ সালের ২১ অক্টোবর তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য