logo
news image

সুইডেনে করোনা কালের একলা শুটিং

নাজমুন নাহার।।
ডকুমেন্টারির শুটিং করলাম আমার বাসার কাছাকাছি অপূর্ব সুন্দর কয়েকটি ন্যাচারাল স্টুডিওতে- পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর জীবন ও সংস্কৃতির উপর। নিজেই ক্যামেরা, লাইট, একশন, পোজ, কথা বলা, এক্টিং করা - সবই করলাম।
একা একা বিশ্ব ভ্রমণের সময় ভিডিও করার অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে এই করোনা সময়ে। জীবনের কোন অভিজ্ঞতাই বৃথা যায় না। তবে করোনার এই সময়ে অভিজ্ঞতার আরো নতুন সংযোজন হলো। একলা চলো রে- আমাদেরকে আরো দারুণভাবে অনেক কিছু শিখিয়ে দিলো। জীবন কোন কিছুর জন্য থেমে থাকে না। মানুষ যত দূরেই থাকবে- কাজ সফল করার জন্য কোন না কোন পথ বের করে নিবেই।
ঘর থেকে বের হলেই এখানকার প্রতিটি জায়গা মনে হয় শান্ত, সুনিবিড়, গোছানো প্রাকৃতিক আমেজে ভরপুর। বাইরে যাওয়ার পর আর ফিরে আসতে ইচ্ছে করেনি। কিন্তু তারপরও বেশি সময় নিতে পারিনি, খুব সকালে আমি ঝটপট এই শহরের কোলে বয়ে যাওয়া নদীর তীরে কিছুক্ষণ শুটিং শেষ করেই আবার বাসায় ফিরে এলাম।
অনেকদিন পর বাসা থেকে বের হয়ে সবকিছুকেই ভিন্ন রকম মনে হলো। গাছের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেওয়া সূর্যটাকেও কেমন যেন নতুন মনে হলো। শরীরের মধ্যে অনেকদিন পর রোদ লাগার অনুভূতিটাও দারুন ছিলো। চোখ বন্ধ করেও ২ মিনিট সূর্যের উত্তাপ নিয়ে নিলাম। এস্কিলসতুনা নদীর পাড়ে ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে অনেক নতুন ফুল ফুটেছে, সেই ফুল গুলো কাছ থেকে দেখে এলাম। এমন সুন্দর প্রকৃতির ভালোবাসা ছেড়েও জীবন বাঁচানোর জন্য এখন ঘরে থাকতে হচ্ছে।
তবে সময় জীবনকে বদলে দেয় কখনো কখনো। আর বদলে যাওয়া সেই সময় পার করছি আমরা এখন পৃথিবীতে।
আমরা প্রতিটা কঠিন সময় থেকে অনেক কিছু শিখি। বিপদে পড়লে কৌশল বের হয়, খারাপ সময় থেকে ভালো কিছু বের হয়। সব সময়ের মাঝেই জীবনের মর্মার্থ খুঁজে নিতে হবে। হতাশ হলে চলবে না, স্বপ্ন বুকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, যখন যে অবস্থায় আমরা থাকি সে অবস্থার মাঝেই বাঁচার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। আর এটাই জীবনের বহমান জার্নি।

* নাজমুন নাহার: বাংলাদেশের পতাকাবাহী প্রথম বিশ্বজয়ী। সুইডেনের করোনা কালের ডায়েরি থেকে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top