যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় দেশব্যাপী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আজ
১২ রবিউল আউয়াল।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও
ওফাত দিবস। সারা
বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনকে পবিত্র
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন
করে থাকেন। বাংলাদেশেও
যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও
ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে দিনটি উদযাপন করেছেন
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)
পৃথিবীতে এসেছিলেন তওহিদের মহান বাণী নিয়ে। প্রচার
করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম।
তাঁর আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির
বাণীর প্রচার সারা বিশ্বে
আলোড়ন সৃষ্টি করে।
লালপুরসহ সারাদেশে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায়
মিলাদ, ওয়াজ ও দোয়া
মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে পবিত্র
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হয়েছে। এছাড়াও
বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ
উপলক্ষে আলোচনা সভা ও
র্যালির আয়োজন করা হয়। সকালে
নাটোরের লালপুর উপজেলার পালিদেহা দক্ষিণপাড়া খানকায়ে ফারুকিয়া আবুল উলাইয়া শরিফে বিশ্ব
নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস উপলক্ষে ১২ রবিউল আওয়াল রোববার সকালে
শোভাযাত্র বের করেন। শোভাযাত্রা শেষে খানকায়ে ফারুকিয়া আবুল উলাইয়া শরিফের সভাপতিপতি
আশরাফ আলী কাজীর সভাপতিত্বে মিলাদ শরিফ, কিয়াম শরিফ, নাতে রাসুল ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত
হয়।
পবিত্র
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি
মো. আবদুল হামিদ আজ
বাদ আসর বঙ্গভবনের দরবার
হলে এক মিলাদ মাহফিলের
আয়োজন করেন।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক
বাণীতে দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহ’র
সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) বিশেষ ক্রোড়পত্র
প্রকাশ করেছে। দেশের
সব বিভাগ, জেলা, উপজেলাসহ
সরকারী-বেসরকারি সংস্থাসমূহে হযরত মুহাম্মদ (সা.)
এর জীবনীর ওপর শনিবার
থেকে পক্ষকালব্যাপী আলোচনা সভা ও
মাহফিলসহ বিশেষ কর্মসূচি পালন
করা হচ্ছে।
এ উপলক্ষে আজ (১০ নভেম্বর)রোববার
ছিল সরকারি ছুটি।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার
দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ
অনুষ্ঠান প্রচার করে।
ইফা’র উদ্যোগে বায়তুল
মুকাররম জাতীয় মসজিদে গতকাল
সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে
পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।
এদিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী
(সা.) উপলক্ষে আজ রোববার বাদ
জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়
মসজিদ মসজিদুল জামি’আয় এক
আলোচনা সভা, মিলাদ ও
দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি
এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর
(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন।
ইফা’র উদ্যোগে শনিবার
বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম
জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পক্ষকালব্যাপি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার শুভ সূচনা হয়। ধর্মসচিব
মোঃ আনিছুর রহমান প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে
অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম
সচিব বলেন, বিশ্বনবী হযরত
মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর কাছে
ইসলাম ধর্মকে শ্রেষ্ঠ ও
পরিপূর্ণ দ্বীন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত
করে গেছেন। তাঁর
শুভাগমনে বিশ্ব সভ্যতা লাভ
করেছে শান্তি, শৃংখলা ও কল্যাণের
পথ।
এতে স্বাগত বক্তব্য দেন
ইফা সচিব কাজী নূরুল
ইসলাম। অনুষ্ঠানে
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন ইফা’র বোর্ড
অব গভর্ণরস-এর গভর্ণর শায়খ
আল্লামা খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী
ও সিরাজ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইফা’র
বোর্ড অব গভর্ণরস-এর
গভর্নর আলহাজ্জ মিজবাহুর রহমান চৌধুরী।
এছাড়া অনুষ্ঠানে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের
অতিরিক্ত সচিব মু. আ.
হামিদ জমাদ্দার, যুগ্ম সচিব মোঃ
জহির আহমেদসহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালকবৃন্দ ও সাধারণ কর্মকতা
কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে এর আগে পবিত্র
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জাতীয়
মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে আয়োজিত
মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলা ও
ইসলামি ক্যালীগ্রাফী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ধর্মসচিব।
ইফা গৃহীত ঈদে মিলাদুন্নবীর
অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- গতকাল
৯ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বর
পর্যন্ত প্রতিদিন বাদ মাগরিব থেকে
বায়তুল মুকাররমের পূর্ব সাহানে ওয়াজ
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত
হবে।
ইফার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি
সম্পর্কে আরও জানানো হয়,
বাংলাদেশ বেতারের সাথে যৌথ প্রযোজনায়
আজ রোববার থেকে আগামী
১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপি মহানবী (সা.) জীবন ও
কর্মের ওপর সেমিনার অনুষ্ঠিত
হবে।
২৩ নভেম্বর পর্যন্ত বায়তুল মুকাররম জাতীয়
মসজিদের উত্তর সাহানে ইসলামী
ক্যালিগ্রাফি, মহানবী (সা.) এর জীবনীভিত্তিক
পোস্টার ও গ্রন্থ প্রদর্শনী
হবে। প্রতিদিন
দুপুর দেড়টা থেকে রাত
সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনী
দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে ৯
নভেম্বর থেকে মাসব্যাপি ইসলামী
বইমেলা শুরু হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা
থেকে রাত ৮ টা
পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য
খোলা থাকবে।
এছাড়া ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
উপলক্ষে ২২ ফর্মার আকর্ষণীয়
‘পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
স্মরণিকা’ প্রকাশ করা হচ্ছে। এছাড়া
জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ
ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়।
জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে আগামী
১৬ ও ১৭ নভেম্বর
বাদ মাগরিব থেকে যথাক্রমে
হামদ-না’ত ও
ক্বিরআত মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২০ নভেম্বর বাদ
আসর বায়তুল মুকাররম জাতীয়
মসজিদের পূর্ব সাহানে রাসূল
(সা.) এর শানে স্বরচিত
কবিতা পাঠের মাহফিল অনুষ্ঠিত
হবে।
অন্যদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৬৪টি জেলা ও
বিভাগীয় কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন
কেন্দ্র, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ
একাডেমী ও ৫৫০টি উপজেলা
বা জোন মডেল রিসোর্স
সেন্টারে র্যালি, সবীনা
খতম, ওয়াজ ও মিলাদ
মাহফিল, মহানবী (সা.) এর জীবনীর
ওপর সেমিনার বা আলোচনা সভা
এবং স্কুল ও মাদ্রাসার
শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামিক সাংস্কৃতিক
প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। (সূত্র:
বাসস)
সাম্প্রতিক মন্তব্য