logo
news image

শুভ জন্মদিন আনু মিয়া

নিশীত সূর্য।  ।  
আমি এক জীবনে যার সঙ্গে সবচে বেশি ঝগড়া করেছি। যাকে কোনভাবেই শান্তিতে থাকতে দেই নি। যার সঙ্গে একটাও ভাল কথা বলেছি বলে মনে পড়ে না। যার সঙ্গে অনবরত খারাপ আচরণ করার কারণে মা আমাকে ঘৃণায় 'থু থু' দিবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। এত কিছুর পর যার আসলে আমাকে ঘৃণা করার কথা! সে কি না দাবি করে বসে, আমাকে সে ছোট থেকেই সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসে। শ্রদ্ধা করে।
করবেই বা না কেন? সেই ৪ বছর বয়স থেকেই আনু মিয়া ওরফ Annama Chowdhury আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। অতি আদরের ছোট বোন। আমার সঙ্গে সঙ্গেই তো বড় হয়েছে সে। সে তো আমার নেওটা হবেই। কিন্তু আমি তো ওর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে করে বড় হয়েছি। এখন তার বিয়ে হয়েছে। বাচ্চার মা হয়েছে। তারপরও ওর সঙ্গে কেন জানি চাইলেও ভাল ব্যবহার করতে পারি না। অথচ মফস্বলে বড় হওয়ার কারণে বাসে চড়ে চড়ে বড় হয়েছি আমি। তখন প্রায় সব বাসের গায়ে লাল কালিতে লেখা থাকতো 'ব্যবহার বংশের পরিচয়'। বিশ্বাস করুন, সেটা দেখেও শিখতে পারি নি। :) ভাল ব্যবহার করিনি।
অথচ আমাদের পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ সে। আমার চোখে সবচেয়ে উপকারী প্রাণী এই আন্নামা। আমার প্রিয় আনু মিয়া। মনে থাকবে, নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় এই আনু মিয়া আমার বাবা'কে তার সেবা এবং মমতা দিয়ে মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরিয়ে এনেছিলো। সন্তান হিসেবে বাবা-মা'র জন্মদিন পালন তো দূরে থাক ভুলে যাওয়া লোক আমি। কিন্তু আনু মিয়া কোন দিনও সেটা ভোলে নি। এখনো সে প্রতিবারই বাবা-মা'র জন্মদিনে একসঙ্গে পালন করার চেষ্টা করে।
এরকম একজন মানুষের সঙ্গে আজীবন ভাল আচরণ করার কথা থাকলেও প্রতিবারই আমি হেরে যাই। আর প্রতিনিয়ত খারাপ আচরণ করি। আমি নিজেকে শোধারাতে চাই রে আনু মিয়া। তুই সাহায্য করিস। বুঝছি আবারও বেশি বেশি করে বাসে ঘুরতে হবে।
সব সময় এরকমই থাকিস। শুভ জন্মদিন আনু মিয়া। বেঁচে থাক। -ফেসবুক থেকে

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top