logo
news image

নাটোরে জনসেবা হাসপাতালের ম্যানেজারের কারাদন্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর।  ।  
রক্তদাতার কাছ থেকে বিনামূল্যে রক্ত নিয়ে রোগিদের কাছে বিক্রি করতেন নাটোরের বেসরকারী জনসেবা হাসপাতালের ম্যানেজার ইয়াদুল ইসলাম ও সহযোগি রনজিৎ কুমার। দীর্ঘ দিন ধরে রক্ত বিক্রি করে রোগির স্বজনদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল তারা দু’জন। মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) ভ্রাম্যমান আদালতে রক্ত বিক্রি চক্রের ওই দু’জনকে এক বছর করে কারাদন্ড দেওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ পায়। সাজাপ্রাপ্ত দু’জন হচ্ছে, জনসেবা হাসপাতালের ম্যানেজার ও ছোট চৌগ্রামের মৃত মেহের আলীর ছেলে ইয়াদুল ইসলাম (৪২) এবং অপারেশন থিয়েটারের স্টাফ পাকুরিয়া এলাকার বাদল লাল চক্রবর্তীর ছেলে রনজিৎ কুমার (৩৫)। এরআগে রোগির শরীর থেকে কিডনি অপসারনের ঘটনায় ইয়াদুলকে চাকরিচ্যুত করে জনসেবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, জেলার সিংড়া উপজেলার থাঐল গ্রামের কৃষক আলম হোসেনের স্ত্রী কমলা বেগম গত সোমবার দুপুরে নাটোর শহরের মাদ্রাসা মোড়স্থ জনসেবা হাসপাতালে ভর্তি হয়। ওই দিন রাত ৮টার দিকে কমলা বেগমের সিজারিয়ান করার জন্য এ নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন পড়ে। পরে ওই হাসপাতালের ম্যানেজার ইয়াদুল ইসলাম রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়ার কথা বলে চার হাজার টাকা দাবী করে। এসময় রোগীর লোক নিরুপায় হয়ে তাদের প্রস্তাবে রাজী হয়। পরে বিষয়টি রোগীর লোক নাটোর ব্লাড ডোনার গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবী রওনক হাসানের দারস্থ হয়। বিষয়টি প্রকাশ পেলে সংগঠনের সভাপতি অনিক সরকার, প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার ইখতিয়ারুল হক (উল্লাস), সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, গণসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক, রিফাত আহমেদ সহ আরও স্বেচ্ছাসেবী উপস্থিত হয়ে ৯৯৯ নম্বরে বিষয়টি অবহিত করে। পরে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শামীম ভূঁইয়া জনসেবা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এসময় ভ্রাম্যমান আদালতে দুই দালাল চক্রকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন তিনি।
নাটোর ব্লাড ডোনার গ্রুপের সভাপতি অনিক সরকার জানান, আমরা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবিদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে নাটোর রেড ক্রিসেন্ট এ জমা রাখি। পরে রোগির স্বজনরা রক্তের জন্য ফোন দিলে তারা রেড ক্রিসেন্ট থেকে বিনামূল্যে নিয়ে যায়। কিন্তু জনসেবা হাসপাতালের ওই দুই দালাল চক্র রক্ত সংগ্রহ করে দেওয়ার নাম করে তারা রোগির স্বজনদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল। বিষয়টি জানার পর আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের পুলিশের সাথে সোপর্দ করেছি।
জনসেবা হাসপাতালের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তারা এই ধরনের কাজ করে আসছিল, সেটা আমাদের জানা ছিল না। তাদের অপরাধের দায় তারাই বহন করবে। এটার সাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জড়িত নয়।
সহকারী কমিশান (ভুমি) নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শামীম ভূঁইয়া বলেন, জনসেবা হাসপাতালের ওই দুই দালাল চক্র মানুষকে ঠকিয়ে তারা টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল। জাতীয় কল সেন্টার ৯৯৯ থেকে বিষয়টি জানানোর পর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top