logo
news image

নর্থ বেঙ্গল চিনিকলে কৃষকের পাওনা ১৫ কোটি টাকা

মোঃ মাজহারুল ইসলাম লিটন।।
চিনি বিক্রি না হওয়ায় এবং চিনির বিক্রয় মূল্য উৎপাদন খরচ অপেক্ষা কম হওয়ায় নাটোরের লালপুর উপজেলার ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিঃ এখন অর্থ সংকটে ভুগছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে শুধু মাত্র কৃষকের পাওনা এখন প্রায় ১৫ কোটি টাকা। দেশের সর্ববৃহত এ চিনিকলটিকে সচল ও টিকিয়ে রাখতে খুব দ্রুত চিনিকলের সাথে শংশ্লিষ্ট ডিস্টিলারী, র সুগারসহ অন্যান্য লাভজনক কারখানার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা এবং চিনি আমদানির ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরী বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চিনিকলের বিভিন্ন দপ্তরের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন এ চিনিকলে ১ হাজার ৭শ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করা হয়। এর মধ্যে ৩শ মেট্রিকটন আখ চিনিকলটির নিজস্ব খামারের বাকি ১৪শ মেট্রিকটন আখ চিনিকলটি আখচাষীদের নিকট থেকে ক্রয় করে থাকে। আর প্রতিদিনের ক্রয় করা আখের দাম ৪৯ লক্ষ টাকা। বর্তমানে আখচাষীরা প্রায় ১ মাস ধরে তাদের আখ বিক্রয়ের টাকা পায়নি। যার পরিমান ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এর আগে মিলটি এমন আর্থিক সংকটে পড়েনি বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা। সালামপুর গ্রামের আখচাষী আমজাদ হোসেন জানান, ২৭ দিন আগে আমি মিলে আখ বিক্রয় করেছি, কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি আখের টাকা পাইনি। কেশবপুর গ্রামের ইনতাজ আলী,মধুবাড়ী গ্রামের মকবুল হোসেনসহ একাধিক কৃষক জানান, তারও প্রায় এক মাস আগে মিলে আখ বিক্রয় করেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা আখের টাকা পাননি। আখের টাকা না পাওয়ায় তারা ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ, শ্রমিকের মুজুরী,আখ পরিবহনের গাড়ির ভাড়াসহ নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজ সঠিক সময়ে করতে পারছেননা। লালপুরের আখচাষী ইনছার আলী, গৌরীপুরের সাবের আলী, কদিমচিলানের জাহাঙ্গীর আলমসহ একাধিক আখচাষীরা জানান, বর্তমানে মোবাইল ব্যাংক শিওর ক্যাশের মাধ্যমে আখের মূল্য পরিশোধ করায় টাকা উত্তলোন সহজতর হলেও কর্তৃপক্ষের টাকা পরিশোধে বিলম্বের কারনে আখচাষীরা বিড়ম্বনায় পড়ছে। তারা আরো জানায়, আখের টাকা প্রতিদিন পরিশোধের ক্ষেত্রে বর্তমানের পদ্ধতি ভালো, কিন্তু পরিশোধে দেরী হলে বর্তমান পদ্ধতিটি খুব কাজে আসেনা। আগে মিলে আখের মূল্য পরিশোধে দেরী হলে প্রয়োজনে কমিশনে দিয়ে বিল ভাঙ্গানো যেত কিন্তু এখন তাও সম্ভব হচ্ছেনা।  
কৃষকের আখের দাম পরিশোধের ব্যাপারে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল জানান, দেশে উৎপাদিত আখের চিনির গুনগত মান অন্যান্য চিনির চাইতে ভালো এবং স্বাস্থ্য সম্মত,আমাদের উপাদিত চিনির  চাহিদা আছে তবে আমদানী করা সাদা চিনির  দাম কম হওয়ায় আমাদের চিনি বিক্রি কম হচ্ছে,বিধায় কৃষকদের সময়মত আখের মূল্য পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছেনা, তবে এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top