logo
news image

অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা (রাজশাহী)।  ।    
রাজশাহীর বাঘার হরিরামপুর গ্রামের কৃষক মোজাহার হোসেনের  সন্তান  নওশাদ আলী। পৈত্রীক সুত্রে একবিঘা জমির মালিক হওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে তার সম্পদের  সঠিক হিসেব কেও রাখেনা। আর এ গুলো সব কিছুই সম্ভব হয়েছে চোরাচালান,আদম ব্যবসা ও অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের মাধ্যমে। বিগত সময়ে বিজিবি কর্মকর্তাকে মারপিট করে পার পেলেও এবার অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনে বাধা দেওয়ার ঘটনায় এসিল্যান্ড-সহ অপর দুই কর্মচারীকে মারপিট করে এলাকা ছাড়া হয়েছেন প্রভাবশালী এই নেতা। তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বর্তমাতে তার বিপুল সম্পদ অনুসন্ধ্যানে নেমেছে দু’দক।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, নওশাদ আলী বাঘার প্রভাবশালী নেতা  ও সাবেক পৌর মেয়র আক্কাছ আলীর ভগ্নীপতি। তিনি  বিয়ের পুর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সিপায় পদে চাকরি নেন। এরপর দুর্ণীতির দায়ে চাকরি হারিয়ে এলাকায় চোরাচালান করাবার শুরু করে। এই কারবার চালাতে গিয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি’র এক সুবেদারকে মারপিট করে এলাকায় আলোচিত হন । পরে চোরাচালান থেকে সরে গিয়ে এলাকায় বালি মহল পরিচালনা ও আদম ব্যাবসা শুরু করেন। সেখানেও ঘটে নানা বিপত্তি। তবে  কয়েক বছর যেতে-না যেতে তিনি কোটিপতি বনে যান।
বাঘা থানা সুত্রে জানায়,২০১৭ সালে ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ থানায় নওশাদ আলীর নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকা প্রতারনার অভিযোগে একটি মামলা হয়। যার নম্বর ৪১৭/১৬ । এ মামলায় তিনি কয়েকদিন হাজত খাটেন। এর আগে আলাইপুর গ্রামের হান্নান মিঞা , মকিবর রহমান ,আনার মোল্লা ও  আয়নাল হক  অভিযোগ করে বলেন, তারা (বিদেশ) মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য নওশাদ আলীকে নগদ  ৮ লক্ষ টাকা  দিয়ে ছিলেন। কিন্তু ভিসা অবৈধ হওয়ার অভিযোগে তাদের পুন:রায় দেশে ফিরে আসতে হয়। পরে গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে তারা অর্ধেকেও কম টাকা ফেরত পান।
সর্বশেষ গত ১৯ জানুয়ারী তার বাড়ির সামনের পদ্মায় অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের ঘটনায় কাগজ-পত্র দেখতে চাওয়ায় বাঘা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি)ইমরুল কায়েস সহ অপর দুই কর্মচারীকে মারপিট করে এলাকা ছাড়েন নওশাদ আলী। ইতোমধ্যে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মানব বন্ধর কর্মসুচী  পালন করেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহ উপজেলার সকল দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
স্থানীয় লোকজন জানান, নওশাদ আলী অবৈধ পথে টাকার পাহাড় জমিয়েছে। এ কারনে কাওকে মানুষ মনে করেন না।  তার কোন কাজে কেও বাধা দিলে তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে তাকে প্রহার করাতে বাধ্য হন। বর্তমানে তিনি একটি পাজেরো জিপে ঘুরে বেড়ান। তার  ঢাকায় রয়েছে বিলাশ বহুল দুটি ফাট। এ ছাড়াও নাটোর জেলার লালুপুর উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে  প্রায় ৬০ বিঘা জমির উপরে তিনি গড়ে তুলেছেন “সাদিয়া এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে  রয়েছে দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ঠ একটি আলিশান বাড়ি, ৩০ টি মাছের প্রজেক্ট (পুকুর)এবং মুরগী সহ গরুর’র ফার্ম।  
অপর দিকে বাঘা সদরের  নারায়নপুর বাজারে রয়েছে এক দাগে প্রায় আড়াই বিঘা জমি। এখানেও  বাসযোগ্য ঘর নির্মান করেছেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল প্রসাধনী (কসমেটিক) ফ্যাক্টরি দেয়ার।  শেষ পর্যন্ত সেটি বন্ধ করে রাজশাহী শহরে একটি  বাড়ি কিনেন নওশাদ আলী। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নওশাদ আলীর এক ঘনিষ্ঠজন জানান, কিচুদিন পুর্বে নাকি সেই বাড়ি বিক্রী করা হয়েছে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা  বলেন, অপরাধী যেই হোকনা কেন তাকে শাস্তি পেতে হবে। আমরা একাধিক সুত্রে জানতে পেরেছি নওশাদ আলী অবৈধ পধে অনেক সম্পাদের মালিক হয়েছে। মুলত কি ভাবে তিনি এতো সম্পদের মালিক হলেন সে বিষয়ে খোঁজ নিতে আমরা দু’দককে চিঠি দিয়েছি।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহাসীন আলী জানান, আলোচিত নওশাদকে গ্রেফতারের নির্দেশ রয়েছে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও জেলা প্রশাসক মহাদ্বয়ের। তাকে সবখানে খুজছে পুলিশ- র্যাব। ইতোমধ্যে তার অবস্থান জানতে  মোবাইল ট্র্যাকিং করা হচ্ছে।  কিন্তু তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সে দেশের যে প্রান্তেই থাকনা কেন তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সাম্প্রতিক মন্তব্য