logo
news image

পেঁয়াজ রোপনে ব্যস্ত নাটোরের কৃষকরা

কালিদাস রায়।  ।  
নাটোর জেলায় প্রতিবছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়। পেঁয়াজের চাষের জন্য এখানকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকুল হওয়ায় প্রতিবছরই জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজের আবাদ করে থাকেন। গত বছর পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে, কৃষি ভর্তুকি কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠভাবে বন্টন করাসহ ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হলে এবার লাভবান হবেন বলে আশাবাদী চাষীরা। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি বছর আহাওয়া অনূকুল থাকায় জেলায় মশলা জাতীয় আবাদ পেঁয়াজের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, এই জেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজের চারা অন্যান্য জেলার চাইতে অনেক ভাল। উৎপাদন বেশি হলে কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার চলনবিলের কিছু অংশ, নলডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া, ঠাকুর লক্ষীকোল, নাটোর সদর উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় কমবেশি পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। তবে চলনবিল ও নলডাঙ্গা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণ পেঁয়াজের চাষ করেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এপর্যন্ত প্রায় ১৬’শ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করা হয়েছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারি মাসের মধ্যে চারা রোপনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া, পাটুল, ঠাকুর লক্ষীকোল এলাকার বিভিন্ন মাঠে পেঁয়াজের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জমি তৈরী, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন ও রোপণ এবং সেচ কার্যে দম ফেলার ফুসরত নেই কৃষকদের। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দৈনিক মজুরী ও চুক্তিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করছেন তারা। উঁচু মাঠগুলোতেও অন্যান্য রবি ফসলের পরিবর্তে এবার পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন তারা।
এদিকে গত বছর পেঁয়াজের ভাল দাম না পাওয়া লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষকদের। প্রতি বিঘায় প্রায় ৬০-৮০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করতে কৃষকদেরকে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। ভাল ফলন পেতে কমপক্ষে দুইবার সেচ দেওয়া, বেশি পরিমাণ মজুরী খাটোনো, অত্যাধিক সারের ব্যবহার করার কারণে খরচের পরিমাণটা বেশি হয় বলে জানান তারা। এছাড়া লোকসান ঠেকাতে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি ও ভারতীয় এলসি পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হলে এবার লাভবান হবেন বলে আশাবাদী চাষীরা।
শামীম আলী প্রামাণিক নামে কৃষক জানান, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপন করতে কমপক্ষে ১৫-২০জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। এছাড়া, প্রতি বিঘায় প্রায় ৩০-৩৫হাজার টাকা খরচ হয়। পেঁয়াজের নায্য দাম নির্ধারণ করা না গেলে কৃষকের মাথায় হাত পড়বে।
আলমগীর নামের অপর এক কৃষক জানান, নাটোরে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। প্রতিবছর ভারতীয় এলসি পেঁয়াজ আমদানির কারণে দেশীয় চাষীরা লোকসানে পড়ে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। তাই কৃষককে বাচাতে ভারতীয় পেয়াজ আমদানি বন্ধের দাবি জানান তিনি।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top