logo
news image

নাটোর সুগার মিল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধে বিপাকে আখচাষী

নিজস্ব প্রতিবেদক, নলডাঙ্গাঃ
উৎপাদন শুরুর ৩ সপ্তাহের পর চিনিকলের বয়েলিং সেকশনের চারটি ট্যাংক রোববার ধসে পড়ায় নাটোর সুগার মিল সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে চিনিকল কৃর্তপক্ষ। আর এতে নলডাঙ্গা উপজেলার কয়েক হাজার আখচাষী তাদের উৎপাদিত আখ নিয়ে মহাবিপাকে পড়ে দুচিন্তা করছে। জমিতে শত শত মণ আখ কেটে হঠাৎ চিনিকল বন্ধ হওয়ায় এসব চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। চিনিকল চালু থাকা অবস্থায় যেসব আখ ক্রয় কেন্দ্রে সরবারহ করেছে সেগুলোর টাকা এখনও হাতে পায়নি চাষীরা। এতে আরও দুচিন্তা বেড়ে গেছে। গত ১৬ নভেম্বর প্রায় ৫৬ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০১৮-২০১৯ মৌসুমে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়। চিনিকল গুদামে পড়ে আছে সাত হাজার টন উৎপাদিত চিনি। এর আগে আরোও দুবার যান্ত্রিক ক্রটির কারণে ৩৪ বছরের পুরানো চিনিকল বন্ধ হয়েছিল। শনিবার সরেজমিন বুড়িরভাগ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবস্থিত আখ ক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুই তিনটি আখ বহনের লরিতে আখ ভরা আছে, আর শত শত মণ আখ মাঠে পড়ে আছে। আখচাষীরা আখ ক্রয় কেন্দ্রে ভীড় করছে। বুড়িরভার গ্রামের আখচাষী জুয়েল আলী জানান, আমার এবার ৪১ বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ৪০ গাড়ি আখ চিনিকলের আখ ক্রয় কেন্দ্রে দিয়েছি। আরো শত শত মণ আখ জমিতে কাটা রয়েছে। এখন গত সোমবার চিনিকল বন্ধ হওয়ার কথা শুনে দুচিন্তায় পড়েছি। শাখাড়ী পাড়ার আখ চাষী তছির হাজি জানান, আমার চার বিঘা জমির আখ নিয়ে কি করবো তা জানতে বুড়িরভাগ চিনিকলের আখ ক্রয় কেন্দ্রে জানতে এসেছি। আরেক আখ চাষী ইসমাইল হোসেন জানান, গতবার থেকে চিনিকল কৃর্তপক্ষ পাওয়ার ক্যাশারে আখ মাড়াই করে গুড় উৎপাদন করা সম্পন্ন বন্ধ করে দিয়েছে। সে অনুযায়ী অনেক পাওয়ার ক্যাশার বিক্রি করে দিয়েছে। এখন পাওয়ার ক্যাশার দিয়ে আখের রস বের করে গুড় উৎপাদন করবো সে সুযোগএখন বন্ধ। আখচাষী আব্দুর জব্বার জানান, বাজারে যে গুড়ের দাম তাতে গুড় উৎপাদন করে লোকসান গুনতে হবে। তাদের মত হাজার হাজার আখচাষী তাদের দুচিন্তার কথা এই ভাবে শুনালেন। নলডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় এবার ১ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। চিনিকলের বুড়িরভাগ আখ ক্রয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন জানান, আখচাষীদের জমিতে যেসব আখ কর্তন করা আছে শুধু সেসব আখ ক্রয় করার সিন্ধান্ত দিয়েছে। এসব ক্রয় করা আখ রাজশাহী সুগার মিলে পাঠানো হবে। নাটোর সুগার মিলের মহাব্যবস্থাপক মাধব চন্দ্র বলেন, গত রোববার চিনিকলের সিরাপ ট্যাংক ধসে পড়ায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন থেকে উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা এসে সেগুলো মেরামতকাজ তদারকি করছে। তবে কবে নাগাত চিনিকল চালু হবে তা সুনিদিষ্ট করে বলতে পারেনি। এবার ২০১৮-২০১৯ মাড়াই মৌসুমে ১ লাখ ৫৮ হাজার ১১৭ টন আখ মাড়াই করে ১২ হাজার ২২৫ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে নাটোর সুগার মিল।

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Top