চিনিকলে সহায়তার প্রস্তাব ভারতের
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা। ।
রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং ‘র’ সুগার থেকে পরিশোধিত চিনি উৎপাদনে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত।
ভারতের খাদ্য সচিবের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সাথে তার কার্যালয়ে বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানান।
এতে ভারতের খাদ্যসচিব রবিকান্ত, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এ.কে.এম দেলোয়ার হোসেনসহ ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রবিকান্ত বলেন, খুব শিগগির ভারতের পক্ষ থেকে একটি সমন্বিত প্রস্তাব শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। এ প্রস্তাবের ভিত্তিতে সহায়তার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নের জন্য উভয় দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হবে।
তিনি বলেন, উচ্চ প্রযুক্তির আখচাষের মাধ্যমে ভারত উদ্বৃত্ত চিনি উৎপাদন করছে। এ বাড়তি চিনি ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করতে আগ্রহী। বাংলাদেশে চিনি উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় তারা এদেশে অপরিশোধিত চিনি রপ্তানির জন্য শিল্পমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেন। এক্ষেত্রে তারা প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি প্রয়োজনে ভারতীয় ‘লাইন অব ক্রেডিট’ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেন।
বৈঠকে দু’দেশের শিল্পখাতে সহায়তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশের চিনি শিল্পের আধুনিকায়ন, ‘র’ সুগার থেকে রিফাইন্ড সুগার উৎপাদন, আখ চাষিদের প্রশিক্ষণ, উচ্চ রিকভারীসম্পন্ন আখের জাত হস্তান্তর এবং চিনি শিল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত আরোপ করা হয়।
শিল্পমন্ত্রী ভারতকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত সরকার ও জনগণের ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। তিনি স্বাধীনতাপরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে স্বদেশে ফিরিয়ে আনতে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কুটনৈতিক সহায়তার কথা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ভারতের জাতীয় মান নির্ধারণী সংস্থা এনএবিএল ইতোমধ্যে ২১টি পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই’র পরীক্ষণ সনদ গ্রহণ করেছে। আরও ১২টি পণ্যের পরীক্ষণ সনদ গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি দ্রুত এসব পণ্যের পরীক্ষণ সনদ গ্রহণে ভারতের খাদ্য সচিব এবং হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের আধুনিকায়ন, উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ‘র’ সুগার পরিশোধনের সুযোগ তৈরি করতে ভারতের সহায়তার প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। এ বিষয়ে একটি সমন্বিত প্রস্তাব পাওয়ার পর তা বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে বলে প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন শিল্পমন্ত্রী।
সাম্প্রতিক মন্তব্য