বাংলাদেশে আখ চাষ বন্ধ করা যাবে না
কৃষিবিদ নিতাই চন্দ্র রায়। ।
১। জীববৈচিত্র ও পরিবেশ সংরক্ষণে আখ অনন্য ভূমিকা পালন করে। আখ সি-৪ প্লান্ট। এটি বাতাস হতে ধান ও গমের চেয়ে প্রায় ৩ থেকে ৪ গুণ কার্বনডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে সমপরিমাণ অস্কিজেন ত্যাগ করে বায়ুকে নির্মল রাখে।
২। যে চাষির আখের আবাদ আছে, সে কখনো জ্বালানির জন্য গাছ কাটেন না। আখের মুথা সারা বছর জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করেন। আখের সবুজ পাতা ও চিনিকলের মোলাসেস পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৩। রোপণ থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত ১২ থেকে ১৪ মাস সময়ে আখ ক্ষেত বিভিন্ন প্রকার উপকারী কীটপতঙ্গ, পাখি ও বন্য প্রাণীর আশ্রয়স্থল হিসেব কাজ করে।
৪। বন্যার সময় যখন কৃষকের সব ফসল বিনষ্ট হয়ে যায় তখন একমাত্র আখই তাঁকে বেঁচে থাকার ভরসা যোগায়।
৫। আখই একমাত্র ফসল, যা চাষি সরাসরি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে পারেন।
৬। আখ গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
৭। চিনি ও গুড় শিল্প গ্রামীণ অরথনীতির হৃদপিণ্ড হিসেবে কাজ করে।
৮। দেশে ১৫ টি সরকারি চিনিকল থাকার কারণে এখনও রাজধানীবাসীসহ দেশের ভোক্তাসাধারণ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে চিনি কিনতে পারছেন।
৯। আখ উৎপাদন ,বিপনন ও প্রক্রিয়াকরণের সাথে দেশের লাখ লাখ কৃষক-শ্রমিক, মেহনতী মানুষ ও তাদের পরিবার পরিজনের জীবন-জীবিকা জড়িত। তা্ই আখ চাষ বন্ধ করে তাদের পথে বসানো যাবেনা।
১০। দেশের চিনিকলগুলি শুধু চিনিই উৎপাদনিই করে না, চিনিকল এলাকায় রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালর্ভাট নির্মাণ করে, বিদ্যালয় পরিচালনা করে , আখ চাষিদের ছেলে-মেয়েদের বৃত্তি প্রদান করে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একালীন আর্থিক সহায়তা করে এক বিরাট সামাজিক দায়িত্ব পালন করে ।
সাম্প্রতিক মন্তব্য