নলডাঙ্গায় অতিথি পাখি শিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক, নলডাঙ্গা (নাটোর)। ।
অতিথি পাখি শিকার করল জনপ্রতিনিধি, অভিযোগ দিয়ে ও প্রতিকার পেল না পাখিপ্রেমীরা। স্থায়ীভাবে বসতি গড়া নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় বাসা ভেঙ্গে অতিথি পাখি শামুকখৈল পাখির বাচ্চা নামিয়ে জবাই করার অভিযোগ উঠেছে নারী কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে। রোববার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার হলুদঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলে গ্রামবাসী ও একটি সেচ্ছাসেবক সংগঠনের সদস্যরা জবাই করা শামুকখৈল পাখির তিনটির বাচ্চা উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়েও প্রশাসন কোন প্রতিকার না করায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সমসখলসি ও হলুদঘর গ্রামের বাগানগুলোতে গত কয়েক বছর থেকে অতিথি পাখি শামুকথৈল বাসা তৈরি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। এ সুযোগে নলডাঙ্গা পৌরসভার ১,২,৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হলুদঘর গ্রামের আনোয়ারা বেগম ও তার জামাই আসাব আলী ওই গ্রামের বাঁশবাগানে গড়ে ওঠা শামুকখৈল পাখির বাসা থেকে বাচ্চা নামিয়ে তা জবাই করে। এখবর জানাজানি হলে গিয়ে গ্রামবাসী, স্থানীয় কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন ও সেচ্ছাসেবক সংগঠক সবুজ বাংলার সদস্যরা ছুটে গিয়ে জবাই করা তিনটি বাচ্চা উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাছে অভিযোগ করেন। স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, অতিথি পাখি গত কয়েক বছর থেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে আমরা কেউ যাতে পাখিগুলো শিকার করতে না পারে তার জন্য সবার মধ্যে প্রচার করি। এভাবে একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে পাখির বাসা থেকে পাখির বাচ্চা নামিয়ে জবাই করলে অন্যরা কি কররে?এ ঘটনা আমি ইউএনও-র কাছে অভিযোগ করেছি কিন্ত প্রতিকার হল না। ওই গ্রামের কাউন্সিলর বাহার উদ্দিন জানান, জবাই করা পাখির বাচ্চা তিনটি নারী কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগমের বাড়ি হতে উদ্ধার করে রেখে দিয়েছিলাম প্রশাসন আসবে শুনে, কিন্ত প্রশাসনের কেউ আসেনি। পরে জবাই করা পাখির বাচ্চাতিনটি মাটির নিচে পুতে রাখা হয়েছে। সেচ্ছাসেবক সংগঠক সবুজ বাংলার সাধারন সম্পাদক ফজলে রাব্বি জানান, আমি খবর পেয়ে আমার সংগঠনের সকল সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজশাহী বন বিভাগে জানিয়েছি কিন্ত লোকবল সংকটের কথা বলে তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। নলডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাহেব আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা আমাদের পৌরসভার নারী কাউন্সিলর এটা ঠিক করেনি। নারী কাউন্সিল আনোয়ারা বেগম জানান, আমি পাখির বাসা ভেঙ্গে না বাসা থেকে বাচ্চাগুলো মাটিতে পড়ে গিয়েছিল তাই আমি বাড়িতে এনে তিনটি পাখির বাচ্চা রান্না করে খাওয়ার জন্য জবাই করি। এ বিষয় স্থানীয়রা মীমাংসা করে দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জেসমিন আকতার বানু জানান, আমি স্থানীয় গ্রামবাসীর অভিযোগ মোবাইলে জেনে নলডাঙ্গা থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি এবং আর যেন পাখি কেউ না মারতে পারে তার জন্য এলাকায় মাইকিং করার নির্দেশ দিয়েছি।
নলডাঙ্গা থানার ওসি তদন্ত উজ্জল হোসেন জানান, পাখির বাচ্চা কারা জবাই করছে তা খুজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিল। আমি সোমবার (৮ অক্টোবর) সকালে এক অফিসার পাঠিয়েছিলাম তদন্ত করার জন্য।
সাম্প্রতিক মন্তব্য