আমরা জাতি-মানব-সমষ্টি বটে একখানা গো
টি এম আহমেদ কায়সার। ।
কোনো শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীতের আয়োজন, তা যতই মহান হোক, প্রথমেই এর সফলতা নস্যাৎ করতে চাইবে তার নিজের এবং সদল অনুপস্থিতি দিয়ে! তাতেও যদি সফলতা থেমে না থাকে, তবে লুকিয়ে চুরিয়ে হাজির হবে তোমার আয়োজনে একদিন। লুকিয়ে - কেননা তাতে যদি অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হয়, অন্যরাও যেতে চায় - এই মস্ত পাপ-তৎপরতায় সে রাজিইবা হবে কেন? আর এই যে সে এসে হাজির হবে সহসা একদিন, কেন? কারণ সে তোমার এই সফলতায় ভাগ বসাতে চায়, সফলতায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়!
জগতের এইসব বুদ্ধি-প্রতিবন্ধি, মুর্খাতি-মুর্খ, বোধান্ধ বধিরদের - কে এল আর কে গেল - এটা মোটেও ভ্রুক্ষেপ না করে যদি, রীতিমত 'সকল কাঁটা ধন্য করে ' ফুটতে শুরু করো, তখন সে অবতীর্ণ হবে বিদগ্ধ সমালোচকের ভূমিকায় - এবার একা নয়, জোট বেধে!
''যা ই বল, আলুর দোষখানা যে ভালই আছে লোকটার, সেটা তো মানবে? থেকেও যে আমি/আমরা নেই - কারণ তো একটাই। ঐ মেয়েটা তো সেদিন আচ্ছা করে ঝেড়ে দিয়েছে ফোনে। কাছে পিঠে পেলে আমিও একদিন টুটি চেপে ধরব।'' (আমার কওমের এই খায়েশগুলিও যেন একদিন সফল হয়, মাবুদ! )
''কাজ একটু আধটু করছে যদিও, কিন্তু করে কী লাভ? দেখো, ইহুদি নাসরারা তো মাথাখানা কিনে নিয়েছে! বাসায় গিয়ে একখানা মুসলমানি কিতাব খুঁজে পাবে না''
':না, না ইহুদি নাসারা নয়, পুরা দস্তুর হিঁদু হয়ে গেছে ব্যাটা! দেখছো না কেমন ধুতি টুতি পরে হিঁদুয়ানি সব কান্ড-কারখানা করে যাচ্ছে।''
এই পর্বে যিনি কথা বলবেন, ধরা যাক, তার আছে বহুমুত্র রোগ, '' না না না, আসলে লোকটা বর্ণচোরা!'' বলেই হয়ত আগত্যা তার হিসি পেল। দু মিনিট পরে টিয়লেট থেকে বেরিয়ে বিজ্ঞের মত মাথা নেড়ে বললেন, '' যা ভাবছো তা না। এ সবই হল এর ইহুদি নাসরা হিঁদু রূপসীদের কব্জা করার কৌশল। লিখে নাও আজ শ্রাবণের তেইশ, সন্ধ্যা নটায় বলছি, কালে কালে ওর মূল বর্ণ প্রকাশ পেলে প্রগতিশীল শিবিরের মাথা হেঁট হয়ে আসবে ...''
যতই মূর্খাতি মূর্খ হোক, দাসানু দাস হোক, রঙচঙে ইন্টারটেইনার হোক, দ্রাবিড় আর্য আর মরু-যাযাবরদের রক্তে শংকর এই কওমের সমস্ত মনের মকসুদ তুমি পূরণ করো, প্রভু!
ইহাদের সকলের গালে এত্তগুলা চুমো পৌছে দিও।
* টি এম আহমেদ কায়সার: পরিচালক, সৌধ, লন্ডন।
সাম্প্রতিক মন্তব্য