চুরি আতঙ্কে আড়ানী বাজার ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা (রাজশাহী)
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে আড়ানী পৌরসভা। সেখানে ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসার বহুদিনের। বিশেষ করে পাট এবং হলুদ ব্যবসায় ঐতিহ্য ধারণ করে আছে এই বাজারটি। তবে গত দুমাস ধরে সেই বাজার ব্যবসায়ীদের রাতের ঘুম হারাম করছে কতিপয় চোর সিন্ডিকেট। অভিযোগ পাওয়া গেছে ১৭টি দোকান চুরির। ফলে চুরি আতঙ্কে এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এই বাজারে শ্রী সুবদ নামে এক ব্যসায়ীর দোকান চুরি হয়েছে এ পর্যন্ত ৩ বার। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে দূধর্ষ চুরি হয়েছে রাজিব নামে এক চাল ব্যবসায়ীর দোকানে।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় যতগুলো হাট-বাজার রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন হাটটির নাম আড়ানী। এই হাটের পার্শ্বে বড়াল নদী সম্পৃক্ত হওয়ায় বহু দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ এখানকার হাটে তাদের পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে আসত। পরবর্তীতে এখানে পৌরসভা স্থাপনের মাধ্যমে এটি বাজারে রূপ নিয়েছে এবং ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সম্প্রাতিক সময়ে এসে এই বাজারের সুনাম নষ্ট করছে কতিপয় চোর সিন্ডিকেট।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই বাজারে গত দেড়মাস পূর্বে চুরি হয় আক্তার হাজী নামে এক ব্যাক্তির গার্মেন্টস-সামগ্রীর দোকান। এর আগে চুরি হয় কালাম ব্যাপারীর চালের দোকান। পরবর্তীতে চুরি হয় শ্রী সুবব সরকারের মুদি দোকান ও শামিম আহাম্মেদের হার্ডওয়ার এর দোকানসহ আব্দুল লতিবের মুদি দোকান।
এ ছাড়াও পরবর্তী মাস থেকে এ পর্যন্ত পর্যায় ক্রমে চুরি হয় দুলাল হোসেন, জিয়া, সাইফুল ইসলাম, রিজবী ও রিপনের দোকান। এর মধ্যে রিপনের ব্যাটারীর দোকান থেকে খোয়া গেছে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল। সর্বশেষ বৃহস্পবিার রাতে চুরি হয়েছে রাজিব নামে এক চাল ব্যবসায়ীর দোকান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাল ব্যবসায়ী রাজিব বলেন, এই বাজারে মূলতঃ কোন কমিটি নাই। নাই কোন বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা। স্থানীয় মেয়র মহাদ্বয়কে বারবার বলা হচ্ছে। তাতে কোন লাভ হচ্ছে না।
আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান সাইদ বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে এখানে বাজার কমিটি নেই। মার্কেট ভিত্তিক কতিপয় ব্যবসায়ীরা নৈশ্য পহরী রাখলেও তার সংখ্য একেবারে নগণ্য। সর্বপরি মাদকাশক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই ধারণা করছেন নেশাখররা এসব চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, এখানে যারা চুরির সাথে সম্পৃক্ত তাদের মধ্যে নাইম নামের এক চোর দেড়মাস পূর্বে হাতে নাতে ধরা পড়ার পর সে এখন কারাগারে। তবে তার সহযোগী হিসাবে এখানে এখন দৃশ্যমান- আইনাল ও মিলনসহ আরো কয়েকজন। এরা দিনের বেলায় কেউ কোন কর্ম করেনা। প্রশাসন চাইলে এদেরকে গ্রেফতারের মাধ্যমে চুরির রহস্য উদঘাটন করতে পারেন।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তঅ (ওসি) মহসীন আলী বলেন, আমি এই থানায় চারদিন পূর্বে যোগদান করেছি। চোর যেই হোকনা কেন তার নাড়ি নক্ষত্র বের করে আইনী ব্যবস্থা নেবো। তবে বাজার এলাকায় বনিক সমিতিসহ নৈশ্য প্রহরী থাকার কোন বিকল্প নাই। তিনি এ বিষয়ে বাজার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মেয়র মহাদ্বয়ের সাথে কথা বলবেন বলে জানান।
সাম্প্রতিক মন্তব্য